উপরোক্ত বর্তনী লক্ষ্য করুন। এখানে, E দ্বারা তড়িচ্চালক বল, R2 দ্বারা গাড়ির বাতির রোধ এবং R3 দ্বারা স্ফুলিঙ্গ সংঘটিত হওয়ার সময় স্পার্ক প্লাগের রোধ বুঝায়। বাস, ট্রাক এবং এ জাতীয় অন্যান্য যানবাহনে তড়িচ্চালক উৎস হিসেবে ব্যাটারী ব্যবহার করা হয়, যার দ্বারা উৎপন্ন মোট তড়িৎচালক বল হলো E এবং r হলো এর অভ্যন্তরীণ রোধ।
এখানে, R1 দ্বারা যেকোনো বর্তনী উপকরণ বুঝাতে পারে। এটা এমন একটা কিছু বা এমন সব উপকরণ যেগুলো গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ থাকার সময় এর বাতির সাথে সিরিজে থাকে। আর ইঞ্জিন চালুর সময় বাতি ও স্পার্ক প্লাগ মিলে যে সমান্তরাল বর্তনী তৈরি করে তার সাথে R1 সিরিজে থাকে। মনে রাখতে হবে, স্পার্ক প্লাগ অতি সামান্য সময়ের জন্য কাজ করে। অগ্নি স্ফুলিঙ্গ ঘটিয়েই এটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। সুতরাং তখন সামগ্রিক বর্তনীতে R3 এর অস্তিত্ব থাকে না। R1 দ্বারা অন্য কোনো তড়িৎ উপকরণ না বুঝালে এটি দ্বারা কমপক্ষে সঞ্চালন তারের রোধ বুঝায়।
তড়িৎ উৎস যে তড়িৎচালক বল (E) উৎপন্ন করে তার সম্পূর্ণটা বাতি R2 এর দু’প্রান্তে আসে না, কিছুটা r ও R1 এ ব্যয় হয় (ভোল্টেজ ড্রপ)। কতটুকু ভোল্টেজ ড্রপ হবে তা নির্ভর করে I (বর্তনীর মূল তড়িৎপ্রবাহ) এর মানের ওপর। যখন স্পার্ক প্লাগ চালু করা হয়, তখন I2 এর মান অশূন্য ও বৃহৎ হওয়ার কারণে I এর মান হঠাৎ অনেক বেড়ে যায়। তখন ওহমের (V = IR = I (R1 + r)) সূত্রানুসারে ভোল্টেজ ড্রপের মান অনেক বেড়ে যায়। ফলে বাতির দু’প্রান্তে তড়িৎ বিভব পার্থক্যও অনেকখানি কমে যায়। এ কারণে তখন (P = V2/R) সূত্রানুসারে বাতিতে তড়িৎ ক্ষমতা কিছুক্ষণের জন্য খুবই কমে যায় এবং বাতি প্রায় নিভুনিভু হয়ে যায়।
ইঞ্জিন চালু হলেই স্পার্ক প্লাগ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ভোল্টেজ ড্রপের মান আগের মতো হয়ে যায় এবং বাতির প্রান্তীয় বিভবপার্থক্যও স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কারণে বাতি তখন আগের মতোই উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে।