কোনো মাধ্যমে আলোর বেগ যত কম তার আলোকীয় ঘনত্ব তত বেশি। যেমনঃ কোনো তরলের ভৌত ঘনত্ব বেশি হলে এর মধ্য দিয়ে কোনো বস্তু গমনে বেশি বাধার সম্মুখীন হবে, ফলে বেশি ঘনত্বের তরলে বস্তুর গতি স্বাভাবিকভাবে কম হবে। ঠিক তেমনি বেশি আলোকীয় ঘনত্বের মাধ্যমে আলোর বেগ তুলনামূলক কম হবে।
কিন্তু আমরা জানি, স্বচ্ছ মাধ্যমে আলোর গতি নিয়ন্ত্রণকারী রাশি হলো প্রতিসরণাঙ্ক। অর্থাৎ যে মাধ্যমের পরম প্রতিসরণাঙ্ক যত বেশি, সেখানে আলোর বেগ তত কম। তাই কোনো জড় মাধ্যমের আলোকীয় ঘনত্বের পরিমাপ হলো এর পরম প্রতিসরণাঙ্ক।
আলোকীয় ঘনত্ব কি ভৌত ঘনত্বের সমানুপাতিক?
যদিও সাধারণভাবে দেখা গেছে, যে মাধ্যমের ভৌত ঘনত্ব বেশি, তার আলোকীয় ঘনত্বও (বা প্রতিসরণাঙ্ক) বেশি। তবে ভৌত ঘনত্ব ও আলোকীয় ঘনত্ব পুরোপুরি সমানুপাতিক নয় (গণিতের ভাষায়)। আবার, বর্ণিত উপর্যুক্ত সম্পর্কও সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যেমনঃ পানি ও কেরোসিনের কথাই ধরা যাক। পানির ভৌত ঘনত্ব (1000 kg/m3) কেরোসিনের ভৌত ঘনত্ব (800 kg/m3) অপেক্ষা বেশি। কিন্তু পানির পরম প্রতিসরণাঙ্ক (1.33) কেরোসিনের পরম প্রতিসরণাঙ্ক (1.44) অপেক্ষা কম।
তাই উপরোক্ত আলোচনায় এটা প্রতীয়মান যে, পদার্থের ভৌত ঘনত্ব ও আলোকীয় ঘনত্ব এক নয়। যদিও রাশি দুটি ঠিক (গাণিতিকভাবে) পরস্পর সমানুপাতিক নয়, তবে দু’টি পদার্থের মধ্যে তুলনায় যেটির ভৌত ঘনত্ব বেশি, সেটির আলোকীয় ঘনত্বও বেশি হয়; কেবল দু’একটি ব্যতিক্রম ব্যতিরেকে।